মব জাস্টিস: খাগড়াছড়ি চ্যাপ্টার

প্রবন্ধ ছিটেফোঁটা
মব জাস্টিস: খাগড়াছড়ি চ্যাপ্টার

মব জাস্টিস: খাগড়াছড়ি চ্যাপ্টার
পূর্বকথা।
মিরপুর ডিওএইচএস মসজিদের জুম্মার নামাজে বাংলা খুতবায় ইমাম সাহেব প্রায়ই দেশের সমসাময়িক বিষয়ের উপরে আলোকপাত করে থাকেন। আজ শুক্রবারের খুতবায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটা মব জাস্টিস ইস্যুর উপরে দৃষ্টিপাত করে তিনি কুরআন শরীফের আয়াত, রসুলের জীবন ও হাদীসের আলোকে এরকম হত্যাকাণ্ড যে কতোটা ঘৃণার তা বর্ণনা করে প্রকৃত মুসলমান হতে হলে এরকম কার্যক্রম থেকে দূরে থাকতে উপদেশ দিয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সম্প্রতি খাগড়াছড়িতেও মব জাস্টিসের নামে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোড়ন তুললেও খাগড়াছড়ির নোয়াপাড়াতে ঘটে যাওয়া মব জাস্টিস আলোচনায় আসেনি মূলত তিনটি কারণে:
প্রথমত দেশের একশ্রেণীর মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত এবং আশির দশকে সমতল থেকে পাহাড়ি এলাকায় স্থানান্তরিত বাঙালিদের মানুষ বলে গণ্য করেন না। ‘সেটলার’ বলে তাদের ঘৃণ্য চোখে দেখা হয় অথচ পৃথিবীর সবখানেই অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক কারণে আভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশন ঘটে থাকে। কলিঙ্গ যুদ্ধের সময় উড়িষ্যা থেকে মাইগ্রেট করে আসা জনতাকে প্রাচীন বাংলা আশ্রয় দিয়েছিল বলে জানা যায়। চাকমা জনগোষ্ঠীরও মাইগ্রেটের ইতিহাস রয়েছে। অন্য কোথাও এটা নিয়ে সমস্যা না হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধত্তোর বাংলাদেশে এটি যেন এক গভীরতম সমস্যা, একটা মহাপাপ। আমার কথা হলো একজন চাকমা বা মার্মা বা ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কেউ ঢাকা বা দেশের অন্যকোথাও বাড়িঘর তুলে থাকতে পারলে একজন বাঙালি কেন পাহাড়ি এলাকায় বাড়িঘর তুলে থাকতে পারবেন না? একইদেশে দু’রকম জনগোষ্ঠীর জন্য দুরকম নিয়ম থাকার অর্থই হলো বৈষম্য। সময় এসেছে দেশে বিরাজমান সবধরনের বৈষম্য দূর করার। পার্বত্য চট্টগ্রামের কম ঘনবসতিপূর্ণ সমতল বা ভ্যালিসমৃদ্ধ এলাকায় হাউজিং এজেন্সির মাধ্যমে নতুন নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সবার বসবাসের জন্য তা উম্মুক্ত করে দেয়া দরকার। পাহাড়ি-বাঙালিদের মাঝে বিরাজমান সাংস্কৃতিক সংঘাত এভাবেই দূর করা সম্ভব।
দ্বিতীয়ত অনেকসময়ই পাহাড়িরা বাঙালিদের উপরে অত্যাচার চালিয়েও এদেশের সু+শীল নামক কিছু ব্যক্তি এবং তাদের তাবেদারদের কারণে খুব সহজেই ভিক্টিম কার্ড খেলে পার পেয়ে যায়। অথচ ‘সেটলার’দের পক্ষে কথা বলার জন্য যেন কেউ নেই। কিছুদিন আগে আমার একটা লেখায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপরে পাহাড়িদের পরিচালিত গনহত্যার কিছু লিংক শেয়ার করেছিলাম। এসব গণহত্যার বিষয়ে অনেকেই ধারণা রাখেন না। কিংবা জানলেও সেটা তারা অজানা কারণে চেপে যান। তথাকথিত ‘আদিবাসী’ ইস্যুতে পাহাড়িরা খুব ভালোভাবেই ভিক্টিম কার্ড খেলে যাচ্ছে।
তৃতীয়ত পাহাড়ি স্টুডেন্টরা সোশ্যাল মিডিয়াতে যতোটা একটিভ এবং প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইনে যতোটা দক্ষ সে তুলনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি স্টুডেন্টরা যেন একটু পিছিয়ে। এরফলে পাহাড়ে রাজনীতির রকমফের এবং জটিলতা সম্পর্কে সমতলের অনেকেই সঠিক ধারণা রাখেন না। সম্প্রতি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ধারায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় গ্রাফিত্তি আন্দোলন বেশ ভালো ভূমিকা রেখেছে। এখানেও দেখা গেছে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে চিন্তাভাবনার বিস্তর ফারাক। বাঙালি ছেলেমেয়েদের গ্রাফিত্তিতে যেখানে একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে সেখানে পাহাড়ি ছেলেমেয়েদের গ্রাফিত্তিতে ফুটে উঠেছে তাদের সেই পুরনো আলাপ, পাহাড় থেকে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব তুলে নিতে হবে। কয়েকদিন আগে পার্বত্য এলাকা ভ্রমণের সময় লামা-আলীকদম-থানচি-বান্দরবানের দেয়ালে এরকম অনেক গ্রাফিত্তি দেখেছি। পৃথিবীর অনেক দেশেই রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা রক্ষার জন্য বিরোধপূর্ণ এলাকা যেমন কাশগড়, খাইবার পাখতুনখোয়া, বেলুচিস্থান, কাশ্মীর, লাদাখ ইত্যাদি এলাকায় সেনা মোতায়েনের নজির রয়েছে। বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকা বিরোধপূর্ণ বিধায় সেখানে সেনা মোতায়েন তাই অস্বাভাবিক কিছু না, বরং সময় এসেছে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাতিল করে যেসব সেনা ক্যাম্প ইতিপূর্বে তুলে নেয়া হয়েছিল সেগুলোতে নতুন করে সেনা মোতায়েন করার।
মব জাস্টিস: খাগড়াছড়ি চ্যাপ্টার।
এবারে আসি গত বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের ঘটনায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মব জাস্টিসে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে যেভাবে পি*টি*য়ে মেরে ফেলা হয়। একইদিন অনেকটা একইরকম ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায়। ভোর সাড়ে চারটার দিকে মটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোঃ মামুন নামে ৩০ বছর বয়সী এক বাঙালি যুবককে চোর সন্দেহে কিছু পাহাড়ি যুবক আটকে রেখে নির্যা*তন করে। নিহত মামুনের মামা মোঃ নুর হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ী মামুনকে সেদিন পাহাড়ি কিছু যুবক পি*টি*য়ে পানখাইয়াপাড়ার স্লুইসগেট এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তারা খাগড়াছড়ি, বাঘাইহাট, মহালছড়ি, দীঘিনালা ইত্যাদি স্থানে ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করে। এপর্যায়ে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পাহাড়ি-বাঙালি উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা এবং দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।
ঘটনাস্থল: দীঘিনালা।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে খাগড়াছড়িতে সংঘটিত মব জাস্টিসের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে বিকেল আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের প্রায় ১০০-১২০ জন স্টুডেন্ট কলেজের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এরপর তাদের মিছিলটা থানা বাজার প্রদক্ষিন করে বোয়ালখালি বাজারের দিকে গেলে লারমা স্কোয়ার এলাকায় প্রায় ৪০/৫০ জন পাহাড়ি যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের উপরে আক্রমণ করে। এরফলে বাঙালি স্টুডেন্টদের প্রতিবাদ মিছিলটা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় একজন অজ্ঞাত পাহাড়ি যুবক তার এসএমজি থেকে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে, ১০ মিনিট পরে সে আবারও ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বলে জানা যায়।
গুলির শব্দ এবং সংঘর্ষের খবর পেয়ে আশেপাশের বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০০-৫০০জন লাঠিসোঁটা নিয়ে লারমা স্কোয়ারের দিকে অগ্রসর হয়। এরফলে উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের এই পর্যায়ে, বিকেল পাঁচটার দিকে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভিতরে আটকে পড়া ১৫/২০ জন স্টুডেন্টকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর ঘন্টাখানেকের মধ্যেই দীঘিনালা থানা থেকে পুলিশের একটি দল এবং দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই সংঘর্ষে প্রায় ১৫-২০জন আহত হয়েছেন এবং বাঙালিদের ১৫ টা ও পাহাড়িদের ৩৫ টা সহ মোট ৫০ টা দোকান আগুনে পুড়ে গেছে বলে জানা যায়। তবে কে বা কারা দোকানে আগুন দিয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও অনেকের ধারণা দীঘিনালা উপজেলাধীন ৩নং কবাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নলেজ জ্ঞানো চাকমার ইন্ধনে পাহাড়ি-বাঙালি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করতে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছে।
লারমা স্কোয়ারের সংঘর্ষে ৩ জন বাঙালি এবং ২ জন পাহাড়ি যুবক আহত হয়েছেন। তাদেরকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়। বর্তমানে দীঘিনালা, বাবুছড়াসহ কয়েকটা এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালিরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে জানা যায়। তবে দীঘিনালা, বাঘাইহাট, খাগড়াছড়ি থেকে সেনাসদস্যরা এসে ঘটনাস্থলে টহল জোরদার করায় পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা যায়।
সেই পুরনো পাপী ইউপিডিএফ: দৃশ্যমান।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে রাত সাড়ে ১০টার দিকে, নালকাটা এলাকায় সেনাবাহিনীর একজন অফিসারের নেতৃত্বে একটি গুরুতর রোগী বহনকারী টহলদলকে পাহাড়িরা পথে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। এসময় তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য খাগড়াছড়ি থেকে আরেকটা টহলদল ঘটনাস্থলে গেলে স্বনির্ভর বাজার এলাকায় পাহাড়িরা তাদেরকেও ঘিরে ফেলে। এরইমধ্যে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ-এর কয়েকজন অস্ত্রধারী উত্তেজিত জনতার মাঝে ঢুকে গিয়ে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। উদ্ভূত অবস্থায় সেনাদলটিকে উদ্ধার করার জন্য খাগড়াছড়ি থেকে আরেকটা সেনা টহলদল সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে তাদেরকেও পাহাড়িরা ঘেরাও করে ফেলে। বারবার অনুরোধ করলেও তারা ঘেরাও অব্যাহত রাখে এবং শত শত টর্চ লাইট জ্বালিয়ে সেনা টহলদলের সদস্যদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একই সাথে ইউপিডিএফ এর দুর্বৃত্তরা সেনা টহলদলকে উদ্দেশ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী প্রথমে মেগাফোনের মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে তাদেরকে সতর্ক করার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা এবং তাদের মাঝে মিশে থাকা ইউপিডিএফ-এর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে না গিয়ে সেনা টহলদলের উপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে।
পরিস্থিতির এই পর্যায়ে বিজিবি’র দুটা টহলদল সেখানে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে উপায়ন্তর না পেয়ে সরকারি জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যরা ইউপিডিএফ-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে ৭জন সন্ত্রাসী হাতে-পায়ে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদেরকে সেনাবাহিনী উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে একজন সন্ত্রাসী মারা যায়। এছাড়াও সেনাবাহিনী ৭জন দুষ্কৃতিকারীকে আটক এবং ইউপিডিএফ-এর ব্যবহৃত একটি অস্ত্রের খালি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে। আটককৃত ব্যক্তিদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। গত দু’দিনের চলমান সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ০৩ তিনজন সন্ত্রাসী পরবর্তীতে মারা যায়।
রাঙ্গামাটিতে পৃথক প্রচেষ্টা।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে খাগড়াছড়ি জেলায় সংঘটিত মব জাস্টিসের প্রেক্ষাপটে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে দীঘিনালায় সংঘটিত ঘটনার সূত্রধরে আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জড়িত পাহাড়ি-বাঙালি পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ছাত্ররা শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা এলাকায় বেশ কয়েকটা গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এবং বেশ কিছু দোকানে অগ্নি*সংযোগের ঘটনা ঘটে। সেনবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। তবে শহরের পরিস্থিতি এখনও বেশ থমথমে। এই সংঘর্ষের ঘটনার কারণে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এছাড়াও ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ নামে একটা পাহাড়ি সংগঠন জানিয়েছে আগামীকাল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ সকাল ৬টা থেকে ৭২ ঘন্টা তিন পার্বত্যজেলায় সড়ক ও নৌপথে কোন যানবাহন চলবে না।
বক্তব্য পরিষ্কার।
আমার কথা পরিষ্কার, একইযাত্রায় পৃথক ফল কেন হবে? রাজশাহী-ঢাকা-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা গেলে খাগড়াছড়ির মব জাস্টিসের ঘটনাকে কেন প্রতিবাদ করা যাবে না? কেন একটা ঘৃন্য অপরাধকে আড়াল করতে ততোধিক ঘৃণ্য অপরাধ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা করা হবে? কেনইবা এই ইস্যুটাকে ভিন্নখাতে নিয়ে যেতে সেনাবাহিনীর সাথে একটা বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ইতিবাচক ভূমিকা সম্পর্কে জানতে হলে চট্টগ্রামের সমন্বকদের জিজ্ঞেস করে দেখুন। একটা মব জাস্টিসের ঘটনার সূত্রধরে কারা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে তা খুঁজে বের করা দরকার। এই ঘটনার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ট্যাটাস দিয়ে এই কুচক্রী মহলের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদেরকেও জবাবদিহিতার মাঝে আনা দরকার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই বিষয়ে কি ভাবছে?
©সুমন সুবহান

পোস্ট ভিউঃ 15

আপনার মন্তব্য লিখুন