কুণাল ও তিষ্যরক্ষিতা উপাখ্যান- প্রেম, প্রতিহিংসা এবং অন্যান্য

ব্লগ ইতিহাস, সাহিত্য ও ঐতিহ্য
কুণাল ও তিষ্যরক্ষিতা উপাখ্যান- প্রেম, প্রতিহিংসা এবং অন্যান্য

কুণাল ও তিষ্যরক্ষিতা উপাখ্যান- প্রেম, প্রতিহিংসা এবং অন্যান্য  

 

সম্রাট অশোক সংকল্প করেছিলেন বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য তিনি দশ কোটি স্বর্ণমুদ্রা দান করবেন নয় কোটি ষাট লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দান করা হলে মন্ত্রীরা জানালেন এভাবে চললে রাজকোষ শূন্য হয়ে যাবে কিন্তু অশোক কথা শুনলেন না, রাজকোষ থেকে দানশালায় প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা পাঠানো অব্যাহত থাকলো কোষাগার শূন্য হবার উপক্রম দেখে মন্ত্রীরা নিরুপায় হয়ে অশোকের পৌত্র সম্পাদির কাছে অভিযোগ জানালেন সম্পাদি তখন যুবরাজ ভবিষ্যতে বহিঃশত্রু দ্বারা রাজ্যাক্রান্ত হলে সম্পদের অভাবে কিছুই করার সুযোগ থাকবেনা যুবরাজ কোষাধ্যক্ষকে রাজাজ্ঞা পালন করতে নিষেধ করলেন

 

অশোক কোষাগার থেকে ধনরত্ন না পেয়ে প্রাসাদের রৌপ্যনির্মিত ধাতুপাত্রগুলো একে একে বিতরণ করতে লাগলেন অবশেষে তাও শেষ হয়ে গেলে রাজপুরীতে মাটির পাত্রের ব্যবহার শুরু হয় অবশেষে একদিন তিনি মন্ত্রীবর্গকে জিজ্ঞেস করলেন, এই রাজ্যের অধীশ্বর কে? তারা উত্তর দিলেন, মহারাজ আপনিই সম্রাট অশোক অশ্রুপূর্ণ চোখে তাকিয়ে বললেন, এ কথা সত্য হতে পারেনা আজ হাতের এই আমলকী খণ্ড ছাড়া আমার আর দান করবার কিছুই নেই এই বলে অশোক সেই আমলকী খণ্ড দানাগারে প্রেরণ করে ভিক্ষুসংঘকে বলে পাঠালেন, এ আমার শেষ দান আরেকদিন আবারও তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এই  রাজ্যের অধীশ্বর কে? মন্ত্রীরা বললেন, মহারাজ আপনিই এই সসাগরা ধরণীর অধীশ্বর অশোক তখন  আবেগ ভরে বলে উঠলেন, সত্যি যদি আমি সসাগরা ধরণীর অধীশ্বর হই তবে আমি সংঘকে তা দান করলাম এই বলে সম্রাট অশোক দানপাত্র মোহরাঙ্কিত করে দিলেন তিব্বতীয় কিংবদন্তী অনুসারে, এই ঘটনার কিছুদিন পর খ্রিষ্টপূর্ব ২৩২ অব্দে ৭০ বছর বয়সে সম্রাট অশোক তক্ষশীলায় মৃত্যুবরণ করেন তার মৃত্যুর পর যুবরাজ সম্পাদি মগধের শূন্য সিংহাসনে আরোহণ করেন এরপর পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটেচন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এবং চাণক্যের কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও ত্যাগের মাধ্যমে যে শক্তিশালী মৌর্য্য সাম্রাজ্যের পত্তন, বিন্দুসারার সময়ে যার অমিত তেজ, অশোকের সময়ে এসে কেন তা সায়াহ্নে পতিত হলো! সাম্রাজ্যের এমন করুণ পরিণতির কারণ উদ্ঘাটন করতে হলে বেশ পিছনে যেতে হবে সম্রাট অশোকের শেষের দিনগুলোতে, বড়ই করুণ ও কদর্য সেই ইতিহাস!         

 

দু’’হাজার বছরেরও আগের ঘটনা।     

 

মৌর্য রাজবংশের তৃতীয় সম্রাট অশোকের দেবী, কারুবকি বা চারুবকি, পদ্মাবতী এবং অসন্ধিমিত্রা নামে চারজন স্ত্রী ছিলেনসিংহলী বৌদ্ধ গ্রন্থ মহাবংশ অনুসারে বিদিশার একজন ব্যবসায়ীর মেয়ে ছিলেন দেবী, উজ্জয়িনীতে শাসক থাকার সময় রাজকুমার অশোক তাকে বিয়ে করেন ২৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাদের মহিন্দ্র নামে এক ছেলে এবং ২৮২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সংঘমিত্রা নামে এক মেয়ের জন্ম হয় দেবী অশোককে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণে ব্যর্থ হয়ে দুই সন্তানকে সাথে পাটলিপুত্র থেকে বিদিশা চলে যান পরবর্তীতে অশোকের এই দুই সন্তান, মহেন্দ্র এবং সংঘমিত্রা ‘‘ধর্ম’’ প্রচারের জন্য সিংহলে চলে যান। এরফলে মহেন্দ্র’’র পক্ষে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়া সম্ভব ছিলনা। 

 

কারুবকি ছিলেন সম্রাট অশোকের দ্বিতীয় স্ত্রী, যিনি পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে ভিক্ষুণী হয়েছিলেন কারুবকি অশোককে ধর্মের পথে চালিত করেন এবং দান-ধ্যানের জন্যও তিনি বিখ্যাত ছিলেন একটি অশোক স্তম্ভে খোদিত শিলালিপিতে উৎকীর্ণ রয়েছে যে, কারুবকির উপদেশে অশোক তার জীবনধারা পরিবর্তন করেন ও জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন এই শিলালিপিতে কারুবকিকে রাজকুমার তিবলের মা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে অশোকের অন্যকোন শিলালিপিতে স্ত্রী ও সন্তানদের নাম উল্লেখ না থাকায় মনেকরা হয় যে, কারুবকী ও তিবল সম্রাটের প্রিয় ছিলেনতবে অশোকের পূর্বে মৃত্যু হওয়ায় রাজকুমার তিবল সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হতে পারেননি  

 

সম্রাট অশোকের তৃতীয় রানি ছিলেন পদ্মাবতীতার সন্তান কুণাল। ‘‘কুণাল’’ শব্দের অর্থ সুন্দর নেত্রের অধিকারী ব্যক্তি। কুণালের চোখ দুটো ছিল খুব সুন্দরসর্বাপেক্ষা মেধাবী এবং সুদর্শন পুত্র কুণালকেই অশোক নিজের উত্তরাধিকারী হিসাবে পছন্দ করেছিলেন। তিনিই হতে পারতেন মৌর্য সাম্রাজ্যের যোগ্য উত্তরসূরি, কিন্তু নিয়তির খেলা বড় অদ্ভুত। প্রাচীন গ্রিকরা বিশ্বাস করতো, কোন কোন মানুষ না চাইলেও অন্ধ নিয়তির ইঙ্গিতে পাপে লিপ্ত হয় এবং দেবতা সেই পাপাচারের শাস্তিও দেন। তাই হয়তো রাজ সিংহাসন নয়, রাজপুত্র কুণালকে মেনে নিতে হয়েছিল নিষ্ঠুর পরিণতি।      

 

অসন্ধিবৎ নামে উত্তরাপথের এক ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজকন্যা অসন্ধিমিত্রা ছিলেন অশোকের চতুর্থ স্ত্রী রাজকুমার অশোকের সাথে তার বিয়ে হয়, সিংহাসন লাভ করার পর অসন্ধিমিত্রা সম্রাট অশোকের প্রধান  মহিষীর মর্যাদা লাভ করেন এবং ২৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তার মৃত্যু পর্যন্ত অশোকের অন্য সম্রাজ্ঞী ও উপপত্নীদের তুলনায় প্রভাবশালী ছিলেন অসন্ধিমিত্রা সম্রাট অশোকের মৃত্যুর চার বছর পূর্বে সন্তানহীনা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন

 

অসন্ধিমিত্রার পরিচারিকা ছিলেন তিষ্যরক্ষিতা, বৌদ্ধগ্রন্থ ‘‘মহাবংশ’’ এবং ‘‘দিব্যাবদান’’-এ অবশ্য ‘‘তিষ্যরক্ষা’’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। প্রথম স্ত্রী দেবী’’র মৃত্যু হলে সম্রাট অশোক তাকে বিয়ে করেন, তিনি অশোকের সর্বশেষ স্ত্রী ছিলেন। ধারণা করা হয় তিষ্যরক্ষিতা গান্ধার প্রদেশের ছিলেন, তার সাথে সম্রাট অশোকের বয়সে অনেক ব্যবধান ছিল।   

 

তিষ্যরক্ষিতা এবং কুণাল ছিলেন সমবয়সী। তিষ্যরক্ষিতা কুণালের প্রতি আকৃষ্ট হলেও সম্রাট অশোকের পত্নী হওয়ায় কুণাল তাকে ‘‘মাতা’’ বলে সম্বোধন করতেন। তাছাড়া নিজ স্ত্রী কাঞ্চনমালার সাথে কুণালের প্রগাঢ় প্রেম ছিল জানা যায়। তবুও কুণালের প্রতি তিষ্যরক্ষিতার যে আকর্ষন তা কি সীমাবদ্ধ ছিল শুধুই মোহ কিংবা ভালোলাগায়! তারচেয়ে বেশি কিছু নয়কি! নিজেকে কতোটা পরিত্যাক্ত মনেহলে একজন নারী হয়ে উঠতে পারেন এতোটাই বিধ্বংসী যে তাতে একটা সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়! মৌর্য্য সাম্রাজ্য এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে গ্রিক সেনাপতি সেলুকাস বাধ্য হয়েছিলেন নিজ কন্যা হেলেনকে চন্দ্রগুপ্তের সাথে বিয়ে দিয়ে সন্ধি স্থাপন করতে। কিংবদন্তী আছে, তিষ্যরক্ষিতা কুণালের কাছে প্রণয় প্রস্তাব করেন কিন্তু কুণাল সেই প্রস্তাবে অসম্মতি জানানতিষ্যরক্ষিতা এটা মেনে নিতে পারেননি, তিনি অপেক্ষায় ছিলেন সময় আর সুযোগের।  

 

রাজপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজপুত্র কুণাল যখন তক্ষশীলায় বিদ্রোহ দমন করতে যান, তিষ্যরক্ষিতা তখন সম্রাট অশোকের সীলমোহর চুরি করে রাজাদেশ জারি করান, কুণালের চক্ষু উৎপাটিত করা হোক। আদেশ পালিত হলো এবং এরফলে মৌর্য সাম্রাজ্য একজন বিচক্ষণ এবং যোগ্য সম্রাটের দ্বারা শাসিত হবার সুযোগ হারালো। পরবর্তীতে সম্রাট অশোক প্রকৃত সত্য জানতে পেরে তিষ্যরক্ষিতাকে জীবন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন এবং সেই নির্দেশ পালন করা হয়। তবে অন্যসূত্র মতে ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবার খবর শুনে তিষ্যরক্ষিতা আত্মহত্যা করেন। অন্ধ রাজপুত্র সম্রাট হতে পারবেন না বিধায় কুণালের পুত্র সম্পাদিকে যুবরাজ ঘোষণা করা হলো, পরবর্তী সম্রাট তিনিই।              

 

কুণাল-তিষ্যরক্ষিতার করুণ গল্পটা যেন আনারকলি ও শাহজাদা সেলিমের মতোই আরেকটা প্রণয়  উপাখ্যান, প্রেমের করুন রস। বরাবরের মতো এরকম ঘটনায় মেয়েদেরকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং পাহাড়সম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাদের প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়। সেলিম এবং আনারকলির মধ্যে যৌন সম্পর্ক সম্পর্কে প্রাচীনতম পশ্চিমা বিবরণগুলি ১৭ শতকের প্রথম দিকে ব্রিটিশ ভ্রমণকারী উইলিয়াম ফিঞ্চ এবং এডওয়ার্ড টেরির জার্নালে লেখা হয়ধারণা করা হয় যে, আনারকলি কোনো এক বণিক বহরের সাথে ইরান থেকে পাঞ্জাব অঞ্চলের লাহোরে অভিবাসিত হয়েছিলেন। কিংবদন্তী মতে, আনারকলিকে শাহজাদা সেলিমের সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের অপরাধে মোগল সম্রাট আকবরের নির্দেশে দুটি ইটের দালানের মাঝে জীবন্ত কবরস্থ করা হয়েছিল। তবে আনারকলির উপাখ্যান আকবরনামা অথবা তুজক-ই-জাহাঙ্গীরীর কোথাও উল্লেখিত হয়নি।

 

আনারকলি’’র গল্পটা প্রথম উঠে আসে ইংরেজ পর্যটক ও বণিক উইলিয়াম ফিঞ্চ-এর কলমে। তিনি ২৪ আগস্ট ১৬০৮ সালে ভারতে এসেছিলেন। তার ভাষ্যমতে, আনারকলির মৃত্যুর ১১ বছর পর, ১৬১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষ থেকে বায়নায় কেনা নীল বিক্রি করতে লাহোরে গিয়ে এই গল্পটা জানতে পারেন। পরবর্তীতে এডওয়ার্ড টেরি, যিনি উইলিয়াম ফিঞ্চ-এর কয়েক বছর পর ভারতবর্ষ ভ্রমণে এসেছিলেন, তিনিও লিপিবদ্ধ করেছেন যে সম্রাট আকবর পুত্র সেলিমকে তার প্রিয়তম স্ত্রী আনারকলির সাথে গোপন সম্পর্কের কারণে ত্যাজ্য করবার হুমকি দিয়েছিলেন, কিন্তু মৃত্যুশয্যায় তিনি তার হুমকি ফিরিয়ে নেন। তবে অন্যান্য সূত্রমতে আনারকলি সম্রাট আকবরের স্ত্রী ছিলেন না।   

 

তিষ্যরক্ষিতার মৃত্যুর কারণ এবং বিধি নিয়ে অনেক কিংবদন্তী প্রচলিত থাকলেও মূল ঘটনা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই, তা হলো তিষ্যরক্ষিতা ছিলেন সম্রাটের সবথেকে যুবা পত্নীতিনি রাজপুত্র কুণালের প্রতি  আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং তার চাতুর্যের ফলেই কুণালের চোখ উপড়ে ফেলা হয়। প্রণয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার মতো বড় অপমান খুব কমই আছে, সম্ভবত নারীদের ক্ষেত্রে এই অপমান আরও বেশি হয়ে থাকে। কুণাল অত্যন্ত সুপুরুষ এবং তিষ্যরক্ষিতা ছিলেন অপূর্ব দর্শন নারী। সামাজিক বা ধর্মীয় কারণে কুণাল তাকে মাতার আসনে বসাতে বাধ্য হলেও তিষ্যরক্ষিতা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। প্রতাখ্যানের  তীব্র দহনে পুড়ে তিষ্যরক্ষিতা তাই ধ্বংসযজ্ঞ রচনা করেছিলেন কুণালের জন্য। আর সেই দহনে নিজেও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিলেন। তিষ্যরক্ষিতা হয়তো মনে মনে বলেছিলেন, কুণাল, তোমার দু’’চোখ আমার বড় প্রিয়, তুমি আমার না হলেও ওই চোখই আমি চাই।    

 

সম্রাট অশোকের হাতে ছিল মৌর্য সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ কিন্তু তার আত্মা আটকে ছিল দয়া নদীর পারে। কলিঙ্গ যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ জাত দুঃখবোধ ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে তিনি আমৃত্যু মুক্তি পাননি। মনের কালিমা দূর করার জন্য অকাতরে রাজসম্পদ বিলিয়ে রাজকোষ খালি করেছেন। নিজের অজান্তেই কিংবা রিপুর তাড়নায় ৬৬ বছর বয়সে বিয়ে করে দুটো মানুষের সম্পর্কের মাঝে সামাজিক বাঁধার প্রাচীর গড়েছেন আর এভাবে হারিয়েছেন তার যোগ্য উত্তরসূরি, সাম্রাজ্যকে দুর্বল করেছেন। কুণাল হয়তো হতে পারতেন মৌর্য্য সাম্রাজ্যের যোগ্য উত্তরসূরি, কিন্তু তিনি আটকা পড়েছিলেন সম্পর্কের বিষম জালে। নিয়তি তাকে দিয়েছে দুঃসহ যন্ত্রণা, করুণ পরিণতি। সম্রাজ্ঞী তিষ্যরক্ষিতা হতে পারতেন সম্রাট অশোকের নিয়তি, কিন্তু তার মন তো বাঁধা পড়েছিল কুণালের চোখে। যুগে যুগে সমাজে এমন অনেক জটিলতর সম্পর্ক ছিল, আছে এবং থাকবে। তবে লেখা শেষ করবো ইডিপাস-এর সেই বিয়োগান্তক কাহিনী দিয়েগ্রিক উপকথায় থিবসের সেই রাজা, যিনি নিষ্ঠুর নিয়তির কোপানলে পড়ে ভোগ করেছিলেন তীব্র মানসিক যন্ত্রণা, বিবেকের তাড়নায় নিজেকে করেছিলেন অন্ধ। ইডিপাস-এর বিয়োগান্তক কাহিনীর আকর্ষণ এতোটাই তীব্র যে প্রাচীন গ্রিক নাট্যকার সফোক্লেস থেকে শুরু করে বিশ শতকের মনঃস্তাত্ত্বিক সিগমন্ড ফ্রয়েড অবধি আখ্যানটি বারবার ফিরে এসেছে অসম প্রেমের উদাহরণ হয়ে, ফ্রয়েডের লেখায় Oedipus Complex বলে একটা পরিভাষা আছেরাজপুত্র কুণাল কিংবা শাহজাদা সেলিমের ভাগ্য বিরম্বনা যেন ইডিপাস-এর সেই বিখ্যাত সংলাপে প্রতিধ্বনিত হয়,   

 

‘‘Ah! Ah! Where has this misery brought me? Is this my own voice I hear carried on the wings of the air? O Fate! What have you done to me?’’   

 

©সুমন সুবহান

 

হদিসঃ

মহাসম্রাট অশোক- . জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া 

২। প্রিয়দর্শী রাজা অশোক - অমরজ্যোতি মুখোপাধ্যায়

মৌর্য সম্রাট প্রিয়দর্শী অশোক- শানজিদ অর্ণব 

স্বদেশ সভ্যতা ও বিশ্ব - জীবন মুখোপাধ্যায়

ইন্টারনেট  



পোস্ট ভিউঃ 19

আপনার মন্তব্য লিখুন