চিরকুট – সতেরো ধান ভানতে শিবের গীত এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ

ব্লগ চিরকুট
চিরকুট – সতেরো  ধান ভানতে শিবের গীত এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ

চিরকুট – সতেরো

ধান ভানতে শিবের গীত এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ   

পছন্দের বা দরকারি বইগুলো সাধারণত রকমারি বা অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম থেকে কিনে থাকি কারণ বয়স হয়েছে, এখন আর বইএর ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে স্টল থেকে স্টলে ঘুরতে ভাল লাগেনা, অথচ একসময় ওভাবেই, বইএর ব্যাগ হাতে নিয়ে বইমেলা প্রাঙ্গনের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরে বেড়াতাম পেশাগত কারণে যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম বা ঢাকা থেকে দূরে কোথাও থাকতে হয়েছিল, তখন বছরের   ছুটিগুলো সাধারণত বইমেলাকে হিসাবে রেখে পরিকল্পনা করতাম অনলাইন মাধ্যমগুলো যখন ছিল না তখন ঢাকায় এলে আজিজসুপার মার্কেট আর বাংলাবাজারের বইএর দোকানগুলোতে ঢুঁ মারা ছিল  নিত্যদিনের অভ্যাস এভাবেই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্যের সাথে একসময় বেশ সখ্য গড়ে উঠেছিল  কৈশোর থেকে এখন অবধি রংপুরে বই কেনা হয় ইষ্টবেঙ্গল লাইব্রেরী থেকে সেই ক্লাস এইটে পড়ার সময়ে, একদিন মা যখন বইকেনার জন্য হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেন তখন থেকেই ইষ্টবেঙ্গল   লাইব্রেরি থেকে বাকীতে বই কেনা যেত কতবার ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দেবার আগে বাকীতে বই কিনে / মাস পরে পরবর্তী ছুটিতে এসে বাকীর টাকা শোধ করেছি তার হিসাব রাখা হয়নি আমি জানিনা রকমারি তাদের গ্রাহকদের বই কেনাকাটার হিসাব রাখে কি না! তবে আমার ধারণা তাদের ওখান থেকে পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকার বই কিনেছি এবারেও / হাজার টাকার বই কেনা হয়েছে এবারে পুরনো লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের বইও কেনা হয়েছে  

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই তাদের পাঠাগারের জন্য বই পাঠাতে অনুরোধ করেন, আমিও আমার   সাধ্যমত চেষ্টা করে থাকি আজ যে দু’’জায়গায় বইএর পার্সেল যাচ্ছে, তার মধ্যে রামু, কক্সবাজারের একটা পাঠাগারও আছে এসব পাঠাগারের যারা উদ্যোক্তা এবং যারা সেখান থেকে বই সংগ্রহ করে পড়েন তাদের জন্য আমার হৃদয়ে একটা আলাদা কুঠুরি আছে কেননা আমি আমাদের সময়ের এরকম কিছু পাঠাগারের কাছে ঋণী সেকালে মূলত স্কুল বা পাড়ার পাঠাগার কিংবা সরকারি পাবলিক লাইব্রেরি থেকে বই সংগ্রহের চল ছিল বন্ধু-বান্ধবরাও অল্পবিস্তর বই কিনে বদলাবদলি করে পড়তাম তবে একটা কথা না বললেই নয়, আমার পেশার কাছে আমি ঋণী, পছন্দের বইএর জন্য প্রাণভরে খরচ করার স্কোপ দিয়েছে      

এতক্ষণ অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে যথেষ্ট অবতারণা করলাম, এবার আসল প্রসঙ্গে আসি গতকাল প্রিয় প্রচ্ছদ শিল্পী চারুপিন্টু ভাইএর একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসের দিকে চোখ পড়ল সেখানে বেশ কিছু বইএর  ব্যতিক্রমধর্মী প্রচ্ছদের ছবি দেখে এবং বইগুলোর ওপরে চারুপিন্টু ভাইএর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য পড়ে খুব ভাল লাগল মনেহল বইগুলো সংগ্রহ করে পড়া উচিত এমনিতেই সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোয় বা সুযোগ পেলেই বইমেলায় যাওয়া হচ্ছে এবারে মাওলা ব্রাদার্সের প্যাভিলিয়ন এবং প্রতিভা প্রকাশের স্টলে আমার বই আছে, সেখানে যাওয়া ছাড়াও লিটলম্যাগ চত্বরে বন্ধুদের স্টল আছে, সেখানেও যাওয়া হয় গতকাল লিটলম্যাগ চত্বরে চারুপিন্টু ভাই এবং ওনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে সন্ধ্যাটা দারুণ কাটলো কিছুকিছু লোক আছেন যাদের সাথে আড্ডা মারায় প্রাপ্তি অনেক, অনেক কিছু জানা যায়, বিস্তর শেখাও যায় ঋষি এস্তেবান ভাই সেরকম একজন মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে সমসাময়িক কিছু ইস্যুজ, বিজয় সরকার, পাগলা কানাই, শাহ আব্দুল করিমকে নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হল উনি আমাকে কথা দিয়েছেন, বিজয় সরকারকে যেহেতু উনি কাছ থেকে কিছুটা হলেও দেখেছেন তাই ভবিষ্যতে ওনাকে নিয়ে লিখবেন আমিও চারুপিন্টু ভাইয়ের ঝকঝকে প্রচ্ছদে বিজয় সরকারকে জানার আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম আল্লাহ্এই ইচ্ছেটা পূরণ করুন    

চারুপিন্টু ভাইএর সাথে কিছু ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে কথা হলো আমার ‘‘বন্ধনহীন গ্রন্থি’’  কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ ভাই করেছেন ‘‘একমুঠো বিকেল’অ্যালবামের প্রচ্ছদ এবং ইলাস্ট্রেশন ওনারই করা ইদানীং আমার লেখালেখিতে যেমন ছেদ পড়েছে, তেমনি দীর্ঘদিন নতুন কোন কবিতার আবৃত্তিও পোস্ট করা হয়নি, ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারণে এই সাময়িক বিচ্ছিন্নতা ঢাকা-কলকাতা মিলে অনেকের কাছেই   কবিতার স্ক্রিপ্ট আছে কিন্তু কাজগুলো নিয়ে এগোনো সম্ভব হয়নি ঠিক একই কারণে এবারের বইমেলাতে ‘‘বসন্ত এসে ছুঁয়ে গেছে’’ কাব্যগ্রন্থটা প্রকাশ করা নিয়েও দোদুল্যমান ছিলাম আমার লেখা কবিতার সর্বশেষ আবৃত্তিগুলো কলকাতা থেকে পৃথা দি করেছেন তবে রোজার পর ইনশাআল্লাহ্‌ ‘‘একমুঠো বিকেল’’ অ্যালবামের দ্বিতীয় পর্ব রিলিজ করবো শুভাগত সিরিজের কবিতাগুলোর সাথে অনেকের পরিচয় আছে, সেগুলো একটু গুছিয়ে এবং নতুনভাবে ধারণ করে রিলিজ করার ইচ্ছে আছে এসবের প্রচ্ছদ এবং ইলাস্ট্রেশন নিয়েই চারুপিন্টু ভাইয়ের সাথে কথা হল রোজার পরে আবারও নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছি বাকীটা আল্লাহ্ ইচ্ছেয় ভাল থাকবেন শুভ রাত্রি     



পোস্ট ভিউঃ 7

আপনার মন্তব্য লিখুন