মানুষ আসলে একা

কবিতা জলের কাছে যাবো
মানুষ আসলে একা

 
রেল লাইন,
জীবন কখনো যেন রেল লাইন,
সমান্তরালে দুটো করোটি হাঁটছে
হাসছে, শূণ্য গর্ভ কথা বলছে-
তবু
স্পর্শ বিহীন, একই আকাশ-চন্দ্রাতপে
তাদের কথা খাবি খায়, হাড়ের গারদে
ঘূর্ণিপাক-ভাবের বুদ্বুদ, কঠিন নীরবতা
তারা
দুজন, তাদের ছায়ারা মেশে তবুও নিস্তব্ধতা,
না বলা কথার টুকরো অপেক্ষায় থাকে,
আপন স্মৃতির রেখায় তাদের দীর্ঘ পথচলা।
 
রেলের কামরা,
চলার পথে রেলগাড়ি যেমন-
ছোটবড় কতো স্টেশনে থামে,
যাত্রীরা কামরায় ওঠে-কেউ কেউ নামে,
জীবনের বিভিন্ন বাঁকে তেমন-
কেউ কেউ আসে, পরিচিত হয়
আবার কেউবা ফিরিয়ে রাখে মুখ
কেউ কামরা আলো করে থাকে,
লেঠেল চোখে জীবনের ডুবোচর
দখল করে, স্বভাবে পরিযায়ী কেউ কেউ-
আড্ডার ফাঁকে এক কাপ দুকাপ চা খায়
বিল দেয়া নিয়ে অযথা হুরোহুরি, তারপর-
নিকোটিনে ব্যক্তিত্বের ব্যারোমিটার মাপে
নেমে যায় যে যার আপন গন্তব্যে,
পেছনে পড়ে থাকে ধুলোমাখা স্মৃতি
কথার টুকরোগুলো সব ইথারে ভাসে।
 
যাত্রী,
দিন শেষে মানুষ আসলে একা-
শেষ ট্রেন ছেড়ে যায়, লাল বিন্দু রেখা
মিশে গেলে, প্ল্যাটফর্মের অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা
নিঃসীম
আঁধারিতে সিগন্যাল খুঁটি - কাকের বাসা
পড়ে থাকা পলিথিন-বাদামের খোসা
পরিত্যক্ত রেল লাইন-রেলের কামরা
জমাট
আঁধারে গুমটি ঘর-চায়ের দোকান, সব ফাঁকা
নিভে যায় আলো-পিদিমের ছায়া, প্ল্যাটফর্মে
রোজ কত পরিচিত মুখ! তবু মানুষ আসলে একা।

পোস্ট ভিউঃ 79

আপনার মন্তব্য লিখুন